মো: রবিউল ইসলাম:
গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলার ধাপেরহাট গোবিন্দপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক সহকারী শিক্ষিকা তার মামাতো ভাইয়ের বিরুদ্ধে গাইবান্ধা বিজ্ঞ জজ আদালতে একটি ধর্ষনের চেষ্টার মামলা দায়ের করেছেন। পুলিশ ইতিমধ্যে মামলাটি তদন্ত করে বিজ্ঞ আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলও করেছেন। আর এ ধর্ষনের চেষ্টার বিষয়ে এলাকায় শুরু হয়েছে নানা মুখিগুঞ্জন। মামলা সূত্রে ও সরেজমিনে এলাকায় গিয়ে জানাগেছে, ঐ সহকারী শিক্ষিকা তার মামাতো ভাই গোবিন্দপুর গ্রামের আ: আজিজের পুত্র রিদয় খান ওরফে তাহারুল (২৪) গত ৭ নভেম্বর রাত আনুমানিক সাড়ে ১০টার দিকে ঐ সহকারী শিক্ষিকা প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে ঘর হইতে বাহির হইলে আসামী চুপিসারে তার ঘরের খাটের নিচে লুকিয়ে থাকে এবং সুযোগ বুঝে তাকে ধর্ষনের চেস্টা চালায়। এসময় শিক্ষিকার চিৎকার শুনে লোকজন ছুটে এলে আসামী মামাতো ছোট ভাই পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় ঐ শিক্ষিকা বাদী হয়ে ঘটনার ১৫দিন পর গত ২২ নভেম্বর/২০২০ইং তারিখে গাইবান্ধা বিজ্ঞ আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। যাহার নং-১১৩। বিজ্ঞ আদালত মামলাটি তদন্তের জন্য সাদুল্লাপুর থানা পুলিশকে আদেশ দেন। সাদুল্লাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মামলাটি ধাপেরহাট পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের এস,আই শহিদুল ইসলামকে তদন্ত করার জন্য দায়িত্ব প্রদান করেন। তদন্তকারী কর্মকর্তা মামলাটি তদন্ত করে আসামীর বিরুদ্ধে মামলার আরজিতে উল্লেখিত ঘটনা সত্য বলে তদন্ত প্রতিবেদন বিজ্ঞ আদালতে দাখিল করেন। সরেজমিনে এলাকায় গিয়ে প্রতিবেশিদের নিকট জানাযায়, ধর্ষনের চেষ্টার মামলা হয়েছে,তার প্রতিবেদনও দাখিল হয়েছে আমরা এর কিছুই জানিনা। অনেকে বলেছেন, জমি জমা সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে তার ছোট মামাতো ভাইকে ফাঁসাতে এমন ন্যাককার জনক মামলা দায়ের করেছেন। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঐ শিক্ষকার বাসার এক ভাড়াটিয়া জানিয়েছেন, কিছুদিন আগে ঐ শিক্ষিকার মোবাইল ও ফেসবুক আইডি হ্যাক করে বিভিন্ন আজে বাজে ছবি ফেসবুকে পোষ্ট করায় ঐ শিক্ষিকা তার মামাতো ভাইকে সন্দেহ করে সাদুল্লাপুর থানায় ওসি তদন্তের নিকট একটি অভিযোগ দাখিল করে ছিলেন। এ বিষয়ে সাদুল্লাপুর থানার ওসি তদন্ত মোস্তাফিজুর রহমান বলেন প্রায় আনুমানিক ৪ মাস আগে ঐ শিক্ষিকা আমার নিকট এসেছিলেন মোবাইল ফোন নিয়ে ফ্যাক আইডির বিষয়ে। আমি বার বার তাকে বলেছিলাম কে করতে পারে বলেন,তখন ঐ সহকারী শিক্ষিকা কাহারো নাম বলেন নাই। তবুও আমি বিষয়টি আমলে নিয়ে প্রকৃত অপরাধিকে সনাক্ত করার চেষ্টা চালিয়েছি। তখন ঐ শিক্ষিকা বলেছিলেন জমি জমা সংক্রান্ত বিষয়ে হৃদয় খান ওরফে তাহারুলের সাথে তাদের মনোমালিন্য চলে আসছে। বর্তমান ধর্ষনের চেষ্টার মামলার বিষয়টি আমার অজানা। এ ব্যাপারে কথা হয় ধাপেরহাট পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনর্চাজ ওসি তদন্ত রজ্জব আলীর সাথে, তিনি বলেন, নারী শিশু মামলা দায়েরের কিছু দিন আগে ঐ শিক্ষিকার স্বামী নাজির হোসেন জমি জমা সংক্রান্ত বিষয়ে হৃদয় খান ওরফে তাহারুলকে বিবাদী করে আমাদের কাছে ১টি লিখিত অভিযোগ দিয়েছিল,বিষয়টি আমরা মিমাংসার জন্য দু’পক্ষকে নিয়ে বসেছিলাম কিন্তু মিমাংসা করতে ব্যর্থ হয়েছি। জমিজমা সংক্রান্ত বিষয় তাই আদালতের আ¤্রয় নেয়ার পরামর্শ দিয়েছি। মামলার তদন্তকারী কর্মকতা ধাপেরহাট পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের এস,আই শহিদুল ইসলাম বলেছেন,আমি মামলাটি তদন্ত কালে, ঘটনা স্থলে গিয়ে তদন্ত করেছি এবং সত্যতা পেয়ে বিজ্ঞ আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছি। এ ব্যাপারে কথা হয় ঐ শিক্ষিকার স্বামী টেইলার্স মাষ্টারের সাথে তিনি বলেন শত্রুতা বসত আমাকে ফাঁসানোর জন্য কিছুদিন আগে আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ইয়াবা ট্যাবলেট আছে মর্মে পুলিশকে মিথ্যা খবর দিয়ে আমার দোকান তল্লাশি চালানো হয়েছিল। এ ব্যাপারে আমি সে সময় একটি সাধারন ডায়েরী করে রেখেছি। সে ডায়েরীতে হৃদয় খান ওরফে তাহারুলের নাম উল্লেখ করেছেন কিনা,এমন প্রশ্নের জবাবে জানান, না, আমি কাহারো নাম দিয়ে ডাইরী করি নাই। শুধু তাই নয় এই আসামী আসামী হৃদয় খান ওরফে তাহারুল ও তার পরিবারের লোকজন বলেছেন- ভিন্ন কথা, জমা জমি সংক্রান্ত বিষয় লইয়া প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতেই এমন ন্যাক্কার জনক মিথ্যা মামলা দায়ের করেছেন। পুলিশ ঘটনা স্থলে এসে এলাকাবাসী ও আশপাসের লোকজনকে ঘটনা সর্ম্পকে কিছু জিজ্ঞাসাবাদ না করেই মোটা অংকের উৎকোচের বিনিময়ে আমাদের বিরুদ্ধে আদালতে মিথ্যা প্রতিবেদন দাখিল করেছে। সবে মিলে আপন ছোট মামাতো ভাইয়ের উপর ফুফাতো বড় বোনের দায়েরকৃত ধর্ষনের চেষ্টা মামলাটি নিয়ে এলাকায় শুরু হয়েছে হ-য-ব-র-ল অবস্থা ও নানা মুখী গুঞ্জন।